রাজধানীর মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত জোরদার করার পাশাপাশি আজ রোববার থেকে দেশব্যাপী বিশেষ চিরুনি অভিযান শুরু করছে সরকার—এমনটাই জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
আজ সকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “মিটফোর্ডে যে বর্বর হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ধরনের ঘটনা কোনো সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি জানান, মামলার ১৯ আসামির মধ্যে ৭ জনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তদন্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, এ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “অপরাধী যে-ই হোক, রাজনৈতিক পরিচয় বা প্রভাবের কারণে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আইন সবার জন্য সমান।” খুলনায় সম্প্রতি সংঘটিত আরেকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়ও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “মিটফোর্ডের ওই ঘটনায় কেউই পুলিশের ‘ট্রিপল নাইন’ নম্বরে ফোন করেনি। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা আনসার সদস্যদেরও কেউ কিছু জানায়নি, যা অত্যন্ত হতাশাজনক।”
দেশে সাম্প্রতিক সময়ে খুন, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, নারী নির্যাতন, মাদক চোরাচালানসহ নানা অপরাধ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি এখন বিশেষ চিরুনি অভিযান পরিচালনা করবে, যা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার সরকারি পরিকল্পনার অংশ।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে লাল চাঁদকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, হত্যার আগে তাকে ডেকে এনে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে আঘাত করে গুরুতরভাবে জখম করা হয়। একপর্যায়ে তাকে বিবস্ত্র করে তার ওপর লাফানো হয়। এই ঘটনায় যুবদল, ছাত্রদল এবং স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতা-কর্মীর সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে এসব সংগঠন থেকে চারজন অভিযুক্তকে বহিষ্কার করা হয়েছে।