নিজস্ব প্রতিনিধি।। অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাতকে এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল বিকালে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত এই আদেশ দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, আসামির তিনদিনের রিমান্ড আবেদন ছিল। তবে, এই কোর্টের রিমান্ড বিষয়ে শুনানি করার এখতিয়ার না থাকায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। পরবর্তীতে সিনিয়র আদালতে রিমান্ড বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধানমণ্ডির ৩ নম্বর সড়ক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এর আগে এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান এবং অধ্যাপক আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন। গত ২০শে ফেব্রুয়ারি মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাজমুল হোসাইন।
শুক্রবার বিকালে আবুল বারকাতকে আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে তাকে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনার পর হাজতে নেয়া হয়। পরে তাকে আদালত কক্ষে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিকাল পৌনে ৪টার দিকে বিচারক মো. জুয়েল রানা আবুল বারকাতকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর অধ্যাপক আবুল বারাকাতকে আবার হাজতে নেয়া হয়। এ সময় তাকে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেন। মামলার বিষয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে আবুল বারকাত বলেন, আমি শিক্ষক মানুষ। আপনারা ভালো থাকুন। আমার কিছু বলার নেই। এরপর তিনি আবার হাঁটতে থাকেন। তাকে আবার প্রশ্ন করা হলে তিনি আবার বলেন, আমার কিছু বলার নেই।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে জনতা ব্যাংক থেকে ২৯৭ কোটি ৩৮ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ঋণের অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। গভর্নর থাকাকালে আতিউর রহমান ও আবুল বারাকাত পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে ওই বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ হিসাবে পাইয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে আতিউর রহমান ও তার সহযোগীরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশল ব্যবহার করে সেই অর্থ আত্মসাৎ করেন।