বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নেপালের সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি নিজের পদচ্যুতির জন্য সরাসরি ভারতকে দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, লিপুলেখ সীমান্ত অঞ্চল নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং অযোধ্যা ও দেবতা রামের জন্মস্থান বিষয়ে মন্তব্য করার কারণেই তাকে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরতে হয়েছে।
গত মঙ্গলবার জেন-জির বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হওয়ার পর বুধবার নিজের দলের মহাসচিবকে লেখা এক চিঠিতে অলি উল্লেখ করেন—
“যদি আমি লিপুলেখ অঞ্চল নিয়ে প্রশ্ন না তুলতাম এবং অযোধ্যা ও দেবতা রাম নিয়ে কথা না বলতাম তাহলে হয়তো এখনো ক্ষমতায় থাকতাম।”
তিনি বর্তমানে নেপালের শিবপুরি ব্যারাকে অবস্থান করছেন বলে জানা গেছে।
সীমান্ত বিরোধের প্রেক্ষাপট
ভারত ও নেপালের মধ্যে লিপুলেখ ও কালাপানি অঞ্চলকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তি অনুযায়ী নেপাল দাবি করে কালী নদীর উৎপত্তিস্থল লিম্পিয়াধুড়া থেকে; সুতরাং কালাপানি ও লিপুলেখ তাদের ভূখণ্ড। তবে ভারত দাবি করে নদীটি কালাপানি গ্রামের কাছ থেকে শুরু হয়েছে এবং এ অঞ্চল উত্তরাখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত।
অলি সরকার এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। তারা ভারতকে এ এলাকায় রাস্তা নির্মাণ ও বাণিজ্য বন্ধ করার আহ্বান জানায়। কিন্তু ভারত জানায়, ১৯৫৪ সাল থেকে তারা লিপুলেখ হয়ে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চালাচ্ছে।
বিতর্কিত মন্তব্য
এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে অলি দাবি করেছিলেন, দেবতা রামের জন্ম নেপালে হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, “রামের অযোধ্যা রাজ্য ভারতের নয়, নেপালের পূর্ব বীরগঞ্জে অবস্থিত। ভারত ভুয়া অযোধ্যা তৈরি করেছে।”
তার এ মন্তব্যে ভারতে ব্যাপক সমালোচনা হয় এবং দুই দেশের সম্পর্ক আরও টানাপোড়েনের মুখে পড়ে।
বিশ্লেষকদের মতে, অলি ধর্মীয় ও সীমান্ত স্পর্শকাতর ইস্যুকে সামনে এনে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চাইছেন। তবে এতে ভারত-নেপাল সম্পর্ক নতুন করে সংকটে পড়েছে।